স্কয়ার
ল্যাশিং : ( Square lashing)
উপকরণ : রশি একটি এবং বাঁশ বা দন্ড ০২টি ।
তৈরি করার কৌশল : একটি বাঁশ বা দন্ডকে মাটির উপর খাড়াভাবে রাখুন। অপর একটি বাঁশ বা দন্ডকে আগের বাঁশ বা দন্ডের উপর আড়াআড়িভাবে রাখুন। যে বাঁশ বা দন্ডকে মাটির উপর খাড়াভাবে রাখা হয়েছে সেটি হচ্ছে ‘পোল’ এবং পোলের উপরে যে বাঁশ বা দন্ডকে আড়াআড়িভাবে রাখা হয়েছে সেটি হচ্ছে ‘বার’। এবার ‘পোল’ এবং ‘বার’ যেখানে মিলিত হয়েছে তার নিচের অংশের পোলে একটি ক্লোভ হিচ বা বড়শী গেরো বাঁধ। এবার ঐ দড়ির চলমান অংশকে‘বারের’ উপর দিয়ে ‘পোলকে’ পিছন দিক থেকে পেঁচিয়ে আবার ‘বারের’ উপর রাখতে হবে । এরপর দড়ির চলমান অংশকে আবার ‘পোলকে’পিছন দিক থেকে পেঁচিয়ে আবার ‘বারের’ উপর রাখতে হবে। এভাবে অন্তত:পক্ষে ৮- ১০ বার আগের বর্ণনা অনুযায়ী দড়ির চলমান অংশ দিয়ে ‘পোল’ এবং ‘বারকে’ জড়িয়ে প্যাঁচাতে হবে। ‘পোলকে’ প্যাঁচানোর সময় দড়িকে ‘পোলের’ নিচে এবং উপরের প্রথমে যে দু’টি প্যাঁচ দেয়া হয়েছিলো পরবর্তী পেঁচগুলি এই দু’টির মধ্যে রাখতে হবে। যাতে আস্তে আস্তে ‘পোলের’ এই অংশের ফাঁক বন্ধ হয়ে যায়। বর্ণনা অনুযায়ী‘পোল’ এবং ‘বারকে’ ৮-১০ বার প্যাঁচান শেষ হলে দড়ির চলমান অংশ দিয়ে ‘পোল এবং ‘বারের’ মাঝে যে দড়ি আছে তাকে শক্ত করে অন্তত:পক্ষে ৩-৪ বার পেঁচিয়ে যাও। দড়ির এই অংশকে দড়ির চলমান অংশ দিয়ে পেঁচানকে ফ্রাপিং (FRAPPING) বলে। ফ্রাপিং যত শক্ত হবে ল্যাসিং তত মজবুত বা শক্ত হবে। ফ্রাপিং (FRAPPING) দেয়া শেষ হলে দড়ির চলমান অংশ দিয়ে ‘বারে’ ক্লোভ হিচ বা বড়শী গেরো বেঁধে ল্যাশিং শেষ করতে হবে ।
ডায়গোনাল ল্যাশিং (DIAGONAL LASHING)
ব্যবহার : একটি বাঁশ বা দন্ডকে অপর একটিবাঁশ বা দন্ডের উপর কোনাকুনিভাবে বা প্রায় কোনাকুনিভাবে রেখে বাঁধার জন্য ডায়াগোনাল ল্যাশিং ব্যবহার করা হয় ।
উপকরণ : রশি একটি এবং বাঁশ বা দন্ড ০২টি ।
তৈরি
করার কৌশল : একটি বাঁশ বা দন্ডকে
অপর একটি বাঁশ বা দন্ডের উপর কোনাকুনিভাবে বা প্রায় কোনাকুনিভাবে( গুণ চিহ্নের মত) অবস্থায় রাখুন। এভাবে রাখার ফলে দু’টি বাঁশ
বা দন্ড যেখানে একত্রিত হবে সেখানে দু’টি বাঁশ বা দন্ডকে একত্র করে একটি টিম্বার
হিচ বা গুড়িটানা গেরো বাঁধুন। এবার দড়ির চলমান অংশের দিক পরিবর্তন করে অর্থাৎ দড়ির
চলমান অংশকে বাইটের দিক নিয়ে দুই বাঁশ বা দন্ডকে একত্র করে ৫-৭ বার প্যাঁচ দিন ।
এরপর যে দিক থেকে আগে পেঁচিয়েছেন তার বিপরীত দিক থেকে দুই বাঁশ বা দন্ডকে একত্র
করে আগের মত ৫-৭ বার প্যাঁচ দিন। এভাবে দু’দিক দিয়ে প্যাঁচান শেষ হলে বাঁশ বা
দন্ডের মাঝে দড়ির যে অংশ আছে তাকে দড়ির চলমান অংশ দিয়ে শক্ত করে অন্তত:পক্ষে ৩-৪
বার প্যাঁচ দিন ।দুই বাঁশ বা দন্ডের মাঝখানের দড়িকে দড়ির চলমান অংশ দিয়ে
প্যাঁচানকে ফ্রাপিং (FRAPPING) বলে । ফ্রাপিং যত শক্ত হবে ল্যাশিং তত মজবুত
বা শক্ত হবে । ফ্রাপিং দেয়া শেষ হলে যে কোন একটি বাঁশ বা দন্ডের সাথে দড়ির চলমান
অংশ দিয়ে ক্লোভ হিচ বা বড়শী গেরো বেঁধে ডায়গোনাল ল্যাশিং শেষ করতে হবে ।
পোল তৈরি (POLE LASHING) :
বেঁধে তাকে লম্বা করার জন্য এই ল্যাশিং ব্যবহার করা হয়।
উপকরণ : বাঁশ বা দন্ড
০২টি এবং রশি ০২টি ।
তৈরি করার কৌশল : একটি বাঁশ বা দন্ডের মাথায় ২০ সে:মি: নিচে এবং
অপর একটি বাঁশ বা দন্ডের নিচের অংশ রেখে বাঁশ বা দন্ডকে পাশাপাশি স্থাপন করে নিচে
রাখা বাঁশ বা দন্ডটি যেখানে উপরের বাঁশ বা দন্ডের সাথে মিলিত হয়েছে তার ৪-৫ সে:মি:
ওপরে দু’টি বা দন্ডকে একত্রিত করে সেখানে
রশির স্থির প্রান্ত দিয়ে একটি বড়শী গেরো বাঁধতে হবে। বড়শী গেরো বাঁধার পর
রশির বাড়তি অংশ দিয়ে দুই বাঁশ বা দন্ডকে একত্র করে নিচ থেকে উপরের দিকে পেঁচিয়ে
যান। ৮-১০ বার প্যাঁচান হয়ে গেলে বাঁশ বা দন্ডকে একত্র করে ক্লোভহিচ বা বড়শী গেরো
বেঁধে ল্যাশিং শেষ করতে হবে।
এরপর নিচের বাঁশ বা দন্ডটি ওপরের বাঁশ বা দন্ডের সাথে যেখানে মিলিত হয়েছে
এবং যেখানে নিচের বাঁশ বা দন্ড শেষ হয়েছে
তার ৪-৫ সে:মি: নিচ থেকে দুই বাঁশ বা দন্ডকে একত্র করে পূর্বের মত ল্যাশিং
বাঁধতে হবে।
এভাবে পোল তৈরি করার জন্য পোল এন্ড শেয়ার ল্যাশিং বাঁধতে
হয়। এক বা একাধিক বাঁশ বা দন্ডকে একত্রে জোড়া দিয়ে লম্বা করার জন্য পোল এন্ড শেয়ার
ল্যাশিং ব্যবহার করা হয়। অনেক সময় এই ল্যাশিংকে পোল ল্যাশিংও বলা হয়ে থাকে।
পোল এন্ড শিয়ার ল্যাশিং (POLE & SHEER LASHING) :
শিয়ার লেগ তৈরি (SHEER
LEG MAKING) :
উপকরণ : বাঁশ বা দন্ড ০২টি এবং লশি ০১টি।
তৈরি কৌশল : দু’টি
বাঁশ বা দন্ডের নিচের অংশ সমান্তরাল রেখায় রেখে দু’টি বাঁশ দন্ডকে একত্র করে উপরের
যে কোন একটি বাঁশ বা দন্ডে দড়ির স্থির প্রান্ত দিয়ে একটি ক্লোভ হিচ বা বড়শী গেরো
বাঁধুন। ক্লোভ হিচ বা বড়শী গেরো বাঁধার পর
দড়ির স্থির প্রান্তের যে বাড়তি অংশ থেকে যাবে তাকে দড়ির চলমান অংশের সাথে পেঁচিয়ে দাও। এবার
দড়ির চলমান অংশ
দিয়ে দু’টি বাঁশ বা দণ্ডকে একত্র করে পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে নিচ থেকে উপরে চলে যান । লক্ষ্য রাখবেন যেন দুই বাঁশ বা দণ্ডের সাথে প্যাঁচানোর সময় একটি দড়ি যেন অপর দড়ির সাথে লেগে থাকে,একটি দড়ি
যেন অপর একটি দড়ির উপরে উঠে না যায় এবং
সেখানে যেন কোন ফাঁক না থাকে। ৮-১০ বার প্যাঁচান শেষ হলে দুই বাঁশ বা দন্ডের
মাঝখানে দড়ির যে অংশ আছে তাকে দড়ির চলমান অংশ দিয়ে শক্ত করে অন্তত:পক্ষে ৩/৪ বার
পেঁচিয়ে দিন। দুই বাঁশ বা দন্ডের মাঝখানের দড়িকে দড়ির চলমান অংশ দিয়ে প্যাঁচানকে ফ্রাপিং
বলে। ফ্রাপিং যত শক্ত হবে ল্যাশিং তত মজবুত বা শক্ত হবে। ফ্রাপিং
দেয়া শেষ হলে প্রথমে যে বাঁশ বা দন্ডে ক্লোভ হিচ বা বড়শী গেরো দিয়ে ল্যাশিং শুরু করেছিলেন
তার বিপরীত বাঁশ বা দণ্ডে ক্লোভহিচ বা বড়শী
গেরো বেঁধে ল্যাশিং শেষ করুন। এভাবে শেয়ার লেগ তৈরি করার জন্য পোল এন্ড শেয়ার
ল্যাশিং ব্যবহার করা হয়। অনেকে এই ল্যাশিংকে কেবলমাত্র শেয়ার ল্যাশিং বলে।
No comments:
Post a Comment